আইসোটোপের আপেক্ষিক পরিমাণ ও মৌলের পারমাণবিক ভর
আইসোটোপ: একই মৌলের এমন সব পরমাণুকে আইসোটোপ বলে, যাদের প্রোটন সংখ্যা সমান কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা ভিন্ন। অর্থাৎ, আইসোটোপের পারমাণবিক সংখ্যা সমান কিন্তু ভর সংখ্যা ভিন্ন।
আপেক্ষিক পরিমাণ: কোনো মৌলে বিভিন্ন আইসোটোপ থাকলে, প্রকৃতিতে সেই মৌলের বিভিন্ন আইসোটোপের যে পরিমাণে উপস্থিত থাকে, তাকে সেই আইসোটোপের আপেক্ষিক পরিমাণ বলে।
মৌলের পারমাণবিক ভর: কোনো মৌলের একটি পরমাণুর গড় ভরকে মৌলের পারমাণবিক ভর বলে।
আইসোটোপের আপেক্ষিক পরিমাণ এবং মৌলের পারমাণবিক ভরের সম্পর্ক
- মৌলের পারমাণবিক ভর নির্ধারণ: কোনো মৌলের পারমাণবিক ভর নির্ধারণের জন্য সেই মৌলের সকল আইসোটোপের ভর সংখ্যা এবং তাদের আপেক্ষিক পরিমাণ জানা প্রয়োজন।
- গণনা পদ্ধতি: প্রতিটি আইসোটোপের ভর সংখ্যাকে তার আপেক্ষিক পরিমাণ দিয়ে গুণ করে সবগুলোর গুণফল যোগ করে মোট যোগফলকে 100 দিয়ে ভাগ করলে মৌলের পারমাণবিক ভর পাওয়া যায়।
আইসোটোপ, আইসোবার, আইসোটোন, আইসোমার, আইসোইলেকট্রনিক এবং আইসোষ্টার: একটি বিস্তারিত ব্যাখ্যা
পরমাণু সম্পর্কে আলোচনা করার সময়, আমরা প্রায়ই আইসোটোপ, আইসোবার, আইসোটোন ইত্যাদি শব্দ শুনি। এই শব্দগুলো মনে হলে একই ধরনের, কিন্তু আসলে এদের মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। আসুন এই পার্থক্যগুলো বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।
আইসোটোপ (Isotope)
- সংজ্ঞা: একই মৌলের এমন সব পরমাণুকে আইসোটোপ বলে, যাদের প্রোটন সংখ্যা সমান কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা ভিন্ন।
- উদাহরণ: হাইড্রোজেনের তিনটি আইসোটোপ আছে: প্রোটিয়াম (H-1), ডিউটেরিয়াম (H-2) এবং ট্রিটিয়াম (H-3)। এদের প্রোটন সংখ্যা একই (1) কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা ভিন্ন।
আইসোবার (Isobar)
- সংজ্ঞা: ভিন্ন মৌলের এমন সব পরমাণুকে আইসোবার বলে, যাদের ভর সংখ্যা সমান কিন্তু পারমাণবিক সংখ্যা ভিন্ন।
- উদাহরণ: কার্বন-14 (C-14) এবং নাইট্রোজেন-14 (N-14) দুটি আইসোবার। দুটিরই ভর সংখ্যা 14 কিন্তু কার্বনের পারমাণবিক সংখ্যা 6 এবং নাইট্রোজেনের পারমাণবিক সংখ্যা 7।
আইসোটোন (Isotone)
- সংজ্ঞা: ভিন্ন মৌলের এমন সব পরমাণুকে আইসোটোন বলে, যাদের নিউট্রন সংখ্যা সমান কিন্তু প্রোটন সংখ্যা ভিন্ন।
- উদাহরণ: কার্বন-14 (C-14) এবং নাইট্রোজেন-15 (N-15) দুটি আইসোটোন। দুটিরই নিউট্রন সংখ্যা 8 কিন্তু কার্বনের পারমাণবিক সংখ্যা 6 এবং নাইট্রোজেনের পারমাণবিক সংখ্যা 7।
আইসোমার (Isomer)
- সংজ্ঞা: একই মৌলের এবং একই ভর সংখ্যার এমন দুটি পরমাণুকে আইসোমার বলে, যাদের নিউক্লিয়াসে নিউক্লিয়নগুলোর বিন্যাস ভিন্ন।
- উদাহরণ: কার্বন-14 এর দুটি আইসোমার আছে।
আইসোইলেকট্রনিক (Isoelectronic)
- সংজ্ঞা: ভিন্ন মৌলের এমন সব পরমাণু বা আয়নকে আইসোইলেকট্রনিক বলে, যাদের ইলেকট্রন সংখ্যা সমান।
- উদাহরণ: Na+, Mg2+, Al3+ এবং Ne এই চারটি আয়ন আইসোইলেকট্রনিক। প্রত্যেকটিতে 10টি ইলেকট্রন রয়েছে।
আইসোষ্টার (Isosteres)
- সংজ্ঞা: ভিন্ন মৌলের এমন যৌগ বা আয়নকে আইসোষ্টার বলে, যাদের একই সংখ্যক পরমাণু এবং একই সংখ্যক ইলেকট্রন থাকে এবং একই ইলেকট্রনিক কনফিগারেশনও একই হয়।
- উদাহরণ: CO এবং N₂ দুটি আইসোষ্টার। দুটিতেই 14টি ইলেকট্রন এবং একই ইলেকট্রনিক কনফিগারেশন রয়েছে।
সারণি:
| শব্দ | সংজ্ঞা | উদাহরণ |
|---|---|---|
| আইসোটোপ | একই মৌল, ভিন্ন নিউট্রন | H-1, H-2, H-3 |
| আইসোবার | ভিন্ন মৌল, সমান ভর সংখ্যা | C-14, N-14 |
| আইসোটোন | ভিন্ন মৌল, সমান নিউট্রন | C-14, N-15 |
| আইসোমার | একই মৌল, একই ভর সংখ্যা, ভিন্ন নিউক্লিয়ার বিন্যাস | কার্বন-14 এর দুটি আইসোমার |
| আইসোইলেকট্রনিক | ভিন্ন মৌল, সমান ইলেকট্রন | Na+, Mg2+, Al3+, Ne |
| আইসোষ্টার | ভিন্ন মৌল, সমান পরমাণু, সমান ইলেকট্রন, একই ইলেকট্রনিক কনফিগারেশন | CO, N₂ |
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
Read more